কত আসনে ইভিএম, এ মাসেই সিদ্ধান্ত: ইসি আলমগীর
- আপডেট সময় ০১:৫৭:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ অগাস্ট ২০২২
- / ১১৭৯ বার পড়া হয়েছে
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. তবে কত আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি। সক্ষমতা ও যৌক্তিকতা বিবেচনা করে চলতি মাসের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি। যে সব আসনে ইভিএমে ভোট হবে, সেখানে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হবে।
আজ নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. আলমগীর এসব কথা বলেন। ভোটে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে বিতর্ক। ক্ষমতাসীন দলের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ করে আসছে। অন্যদিকে ৩০০ আসনেই ইভিএমে ভোট চায় আওয়ামী লীগ।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইসির সংলাপে ২২টি দল ইভিএম নিয়ে তাদের মতামত জানিয়েছে। এর মধ্যে সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ ১৪টি দল এ ডিভাইস ব্যবহার নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি দল সরাসরি ইভিএমের বিরোধিতা করেছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগসহ চার দল ইভিএমে ভোট চেয়েছে। আরও কয়েকটি দল শর্তসাপেক্ষে ইভিএমের পক্ষে। আর বিএনপিসহ ৯টি দল ইসির সংলাপ বয়কট করেছে। তারাও ইভিএমের বিরুদ্ধে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. আলমগীর বলেন, ‘ইভিএম ব্যবহার করা হবে। তবে আসন সংখ্যা নিয়ে আমরা এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি। আমরা এটা নিয়ে আলোচনা করছি। আমাদের সামর্থ্য কত, ইভিএম কত, কতজন প্রশিক্ষিত জনবল আছে? কতজন সাপোর্টিং কর্মী? তাদের সঙ্গে কয়টি আসনে ভোট করা যায়, তা দেখছি। আর আমরা যদি আরো কিছু করতে চাই তাহলে আরো কত (ইভিএম) লাগবে, তার জন্য কত টাকা লাগবে, নতুন প্রজেক্ট নিতে হবে নাকি? আমাদের কি সেই সময় আছে? সংগ্রহ, প্রশিক্ষণ নিয়ে আলোচনা চলছে। আলমগীর বলেন, এ মুহূর্তে ৭০ থেকে ৮০টি আসনে ভোট দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে ইসির। তিনি বলেন, অনেক রাজনৈতিক দল ৩০০ আসনে ইভিএম চায়। কোনো কোনো দল একটি আসনও চায় না। ইসি সবাইকে সমান গুরুত্ব দিতে পারে না। ইসি তার ইভিএমের সক্ষমতা এবং যৌক্তিকতার দিকে মনোনিবেশ করবে। কারো মুখ দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণের জন্য ইভিএমের সক্ষমতা ও সুবিধার কথা মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ইভিএম নিয়ে সন্দেহ ও অভিযোগের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার ড. আলমগীর বলেন, ইভিএমে কারচুপির প্রমাণ না দেওয়া পর্যন্ত আমি বিশ্বাস করব না। জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে, কিন্তু প্রমাণিত নয়। যারা অভিযোগ করেছেন তাদের আমরা যাচাই-বাছাই করছি। কিন্তু যারা আমাদের কাছে এসে অভিযোগ করেননি, আমরা তা আমলে নিইনি।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৮০ শতাংশ ভোট পড়েছে। তিনি বলেন, গত সংসদ নির্বাচনে ৬টি আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছিল। তাতে কোনো চ্যালেঞ্জ ছিল না। অনেক উপনির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন ইভিএমে পরিচালিত হয়েছে। কেউ বলেনি যে তিনি ইভিএমের কারণে হেরেছেন বা আদালতে মামলাটি চ্যালেঞ্জও করেছেন।
কারচুপির সুযোগ নেই দাবি করে ইসি ইভিএম ব্যবহার করে। আলমগীর বলেন, ‘ইভিএম চুরি হতে পারে। কিন্তু আমাদের যে ইভিএম আছে, তা চুরি হতে পারে, তার প্রমাণও দিয়েছেন তিনি। সেই চ্যালেঞ্জ বেশ কয়েকবার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে আজ পর্যন্ত কেউ প্রমাণ করতে পারেনি যে ‘আপনার ইভিএম চুরি হতে পারে।’
ইভিএম-এর নানা সুবিধা-অসুবিধা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ইভিএমে কারচুপি হতে পারে, সেটা তিনি প্রমাণ করেছেন। কয়েকবার ওপেন চ্যালেঞ্জ দিয়েছি। আমি লিখিতভাবে বলেছি। আমাদের চ্যালেঞ্জ এখনও উন্মুক্ত। এটা বন্ধ করেনি। আপনি কেবল বাইরে থেকে বলছেন যে এটি এই – এটির ভিত্তিতে একটি দেশ বা সংস্থা চলতে পারে না। একটি প্রতিষ্ঠান চলে তার প্রমাণের ভিত্তিতে, তার দক্ষতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে।’
মো: আলমগীর বলেন, নির্বাচনে গুরুতর অনিয়ম হলে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন স্থগিত করতে পারে। কিন্তু সেই নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা বিদ্যমান আরপিওতে নেই। এই ক্ষমতা থাকা উচিত বলে মনে করে ইসি। এ বিষয়ে হাইকোর্টের একটি রায় রয়েছে। কিন্তু তিনি তা দেখতে পাননি। আদালতের রায় কার্যকর করার দায়িত্ব ইসির। আইনে যোগ করতে কোন সমস্যা নেই