০৯:৪৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

ইরানে ভিডিও ভাইরাল হওয়া সেই তরুণীকে গুলি করে হত্যা

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৫:২৬:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ১৩০৮ বার পড়া হয়েছে

bdopennews

হাদিস নাসাফি ২০ বছরের তরুণী, যার খোলা চুল পেছনে বেঁধে সাহসিকতার সঙ্গে বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল, তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর পেট, ঘাড়, হৃৎপিণ্ড ও হাতে গুলি করা হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই এ তথ্য জানিয়েছে।

হাদিসের দাফনের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যায় সদ্য খনন করা কবরের পাশে তাঁর ছবির পাশে লোকজন কাঁদছে। সেই ভিডিও টুইট করেছেন মাসিহ আলিনেজাদ নামের ইরানের একজন সাংবাদিক ও অধিকারকর্মী।

হাদিসের ডাকনাম ‘পনিটেইল গার্ল’। অন্য অনেক ইরানি নারী যাঁরা সাহসের সঙ্গে প্রতিবাদ করার জন্য চুল খুলে পুলিশ অফিসারদের মুখোমুখি হয়েছিলেন, তাঁদেরই একজন হাদিস।

নিউজউইক ও নিউজডটকমএইউ খবরে বলা হয়, কারাজ শহরে বিক্ষোভ চলাকালে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী তাঁকে বেশ কয়েকটি গুলি করে। ২০ বছরের হাদিসের এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর তিনি মাসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে ইরানজুড়ে বিক্ষোভের প্রতীকে পরিণত হন।

১৬ সেপ্টেম্বর ‘নীতি পুলিশ’–এর হেফাজতে মাসা আমিনি নামের ২২ বছরের এক তরুণীর মৃত্যু ঘিরে ইরানজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে এ বিক্ষোভ চলছে। মেডিকেল প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাসার মাথায় অনেকগুলো আঘাত করা হয়েছে, যার কারণে তিনি কোমায় চলে গিয়েছিলেন। তবে পুলিশ দাবি করছে, তিনি হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন।

১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে নারীদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করে আইন করা হয়। এটি নারীদের কাছে তেমন জনপ্রিয়তা পায়নি। ইরানের নারীরা সাধারণত মাথায় ঢিলেঢালাভাবে স্কার্ফ পরে থাকেন।

আরও পড়ুন

ইউরোনিউজের খবরে বলা হয়, ১৯৮১ সালে আইনটি কার্যকর করা হলে ব্যাপক বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছিল, যা এখনো বিক্ষিপ্তভাবে অব্যাহত রয়েছে।

ইরানের কর্মকর্তারা গতকাল বলেন, বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ১ হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজধানী তেহরানসহ দেশটির বিভিন্ন এলাকার সড়কে প্রতিদিনই বিক্ষোভ হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল রাতেও বিক্ষোভ হয়েছে।

তেহরানে বিক্ষোভকারীরা ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনির পতন চেয়ে স্লোগান দিয়েছেন। স্লোগানে স্লোগানে তাঁরা বলেছেন, ‘স্বৈরশাসক নিপাত যাক।’

বিক্ষোভের কিছু ছবি প্রকাশ করেছে আইএইচআর। ছবিতে দেখা যায়, নিরাপত্তা বাহিনীর কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ার পরও বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন।

নরওয়েভিত্তিক কুর্দি মানবাধিকার সংগঠন হেনগাও প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, ইরানের কুর্দিস্তান প্রদেশের সানন্দাজ এলাকায় নারীরা হিজাব খুলে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তাঁদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে গাড়ি চালকেরা হর্ন বাজাচ্ছেন।

বিক্ষোভে উসকানির অভিযোগে ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্য ও নরওয়ের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে ইরান। বিক্ষোভকারীদের ওপর দমনপীড়ন চালানোর নিন্দা জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এই বিক্ষোভের সমর্থনে গত রোববার লন্ডনে বিক্ষোভ হয়েছে।

গত সোমবার অসলোভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) জানিয়েছে, চলমান বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত অন্তত ৭৬ জন নিহত হয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ইরানে ভিডিও ভাইরাল হওয়া সেই তরুণীকে গুলি করে হত্যা

আপডেট সময় ০৫:২৬:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

হাদিস নাসাফি ২০ বছরের তরুণী, যার খোলা চুল পেছনে বেঁধে সাহসিকতার সঙ্গে বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল, তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর পেট, ঘাড়, হৃৎপিণ্ড ও হাতে গুলি করা হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই এ তথ্য জানিয়েছে।

হাদিসের দাফনের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যায় সদ্য খনন করা কবরের পাশে তাঁর ছবির পাশে লোকজন কাঁদছে। সেই ভিডিও টুইট করেছেন মাসিহ আলিনেজাদ নামের ইরানের একজন সাংবাদিক ও অধিকারকর্মী।

হাদিসের ডাকনাম ‘পনিটেইল গার্ল’। অন্য অনেক ইরানি নারী যাঁরা সাহসের সঙ্গে প্রতিবাদ করার জন্য চুল খুলে পুলিশ অফিসারদের মুখোমুখি হয়েছিলেন, তাঁদেরই একজন হাদিস।

নিউজউইক ও নিউজডটকমএইউ খবরে বলা হয়, কারাজ শহরে বিক্ষোভ চলাকালে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী তাঁকে বেশ কয়েকটি গুলি করে। ২০ বছরের হাদিসের এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর তিনি মাসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে ইরানজুড়ে বিক্ষোভের প্রতীকে পরিণত হন।

১৬ সেপ্টেম্বর ‘নীতি পুলিশ’–এর হেফাজতে মাসা আমিনি নামের ২২ বছরের এক তরুণীর মৃত্যু ঘিরে ইরানজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে এ বিক্ষোভ চলছে। মেডিকেল প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাসার মাথায় অনেকগুলো আঘাত করা হয়েছে, যার কারণে তিনি কোমায় চলে গিয়েছিলেন। তবে পুলিশ দাবি করছে, তিনি হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন।

১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে নারীদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করে আইন করা হয়। এটি নারীদের কাছে তেমন জনপ্রিয়তা পায়নি। ইরানের নারীরা সাধারণত মাথায় ঢিলেঢালাভাবে স্কার্ফ পরে থাকেন।

আরও পড়ুন

ইউরোনিউজের খবরে বলা হয়, ১৯৮১ সালে আইনটি কার্যকর করা হলে ব্যাপক বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছিল, যা এখনো বিক্ষিপ্তভাবে অব্যাহত রয়েছে।

ইরানের কর্মকর্তারা গতকাল বলেন, বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ১ হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজধানী তেহরানসহ দেশটির বিভিন্ন এলাকার সড়কে প্রতিদিনই বিক্ষোভ হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল রাতেও বিক্ষোভ হয়েছে।

তেহরানে বিক্ষোভকারীরা ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনির পতন চেয়ে স্লোগান দিয়েছেন। স্লোগানে স্লোগানে তাঁরা বলেছেন, ‘স্বৈরশাসক নিপাত যাক।’

বিক্ষোভের কিছু ছবি প্রকাশ করেছে আইএইচআর। ছবিতে দেখা যায়, নিরাপত্তা বাহিনীর কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ার পরও বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন।

নরওয়েভিত্তিক কুর্দি মানবাধিকার সংগঠন হেনগাও প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, ইরানের কুর্দিস্তান প্রদেশের সানন্দাজ এলাকায় নারীরা হিজাব খুলে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তাঁদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে গাড়ি চালকেরা হর্ন বাজাচ্ছেন।

বিক্ষোভে উসকানির অভিযোগে ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্য ও নরওয়ের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে ইরান। বিক্ষোভকারীদের ওপর দমনপীড়ন চালানোর নিন্দা জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এই বিক্ষোভের সমর্থনে গত রোববার লন্ডনে বিক্ষোভ হয়েছে।

গত সোমবার অসলোভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) জানিয়েছে, চলমান বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত অন্তত ৭৬ জন নিহত হয়েছেন।