দুই ছাত্রলীগ কর্মীসহ ৪ গ্রেপ্তার, ছাত্রের মোবাইল ফোন উদ্ধার: র্যাব
- আপডেট সময় ০৫:০২:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ জুলাই ২০২২
- / ৮৭৯ বার পড়া হয়েছে
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ওই ছাত্রের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
চারজনের মধ্যে দুজন ছাত্রলীগ কর্মী। বাকি দুজন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
শনিবার সকালে র্যাব ৭ হাটহাজারীর কোম্পানি কমান্ডার মাহফুজুর রহমান এ তথ্য জানান। বেলা ১১টার দিকে নগরের চান্দগাও ক্যাম্প র্যাবের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ বিস্তারিত জানাবেন।
চারজন হলেন, মেহেদী হাসান ওরফে হৃদয়, আজিম হোসেন, বাবু ও খাওয়ান শাওন। এদের মধ্যে মেহেদী ও আজিম ছাত্রলীগের কর্মী। মেহেদী ইংরেজি বিভাগের 2017-18 শিক্ষাবর্ষের ছাত্র এবং আজিম ইতিহাস বিভাগের 2019-20 শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। শুক্রবার রাতে রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে র্যাব।
গত ১৭ জুলাই (রবিবার) রাত সাড়ে ৯টায় ক্যাম্পাসে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও মারধর করে পাঁচ যুবক। বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় পাঁচ যুবক ওই ছাত্রকে বেঁধে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে। তার সঙ্গে থাকা এক বন্ধু প্রতিবাদ করলে তাকেও মারধর করা হয়। গত মঙ্গলবার এ ঘটনায় প্রক্টরের কাছে অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী। এর একদিন পর বুধবার হাটহাজারী থানায় মামলা করেন তিনি।
অভিযুক্ত মেহেদী ও আজিম ছাত্রলীগের কর্মী বলে নিশ্চিত করেছেন ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রেজাউল হক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মেহেদী ও আজিম দুজনেই জুনিয়র। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে যৌন হয়রানির মামলায় মঙ্গলবার রেজাউল হককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিতে বাধা দেন। এ জন্য ঘটনার দুই দিন পর প্রক্টরের কাছে অভিযোগ করেন ওই শিক্ষার্থী। তবে রেজাউল হকের দাবি, তিনি ওই ছাত্রকে অভিযোগ দায়ের করতে বাধা দেননি।
এ ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর বুধবার থেকে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে। রাতে শিক্ষার্থীরা হল থেকে বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয়। ওই দিন রাত একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসান ঘটনাস্থলে গিয়ে চার কার্যদিবসের মধ্যে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার ঘোষণা দেন। অন্যথায় প্রক্টরিয়াল বডি পদত্যাগ করবে বলে জানান তিনি।
ছাত্রলীগের মানববন্ধনেও মেহেদী ছিলেন
নিপীড়নের প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার হাজার হাজার শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে প্ল্যাকার্ড ও স্লোগান নিয়ে শহীদ মিনার চত্বরে কর্মসূচি পালন করে। একই দিন দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের সামনে মানববন্ধন করেন সভাপতি রেজাউল হকের অনুসারীরা।
অনুষ্ঠানের পর সিএফসির একাধিক নেতাকর্মী মানববন্ধনের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেন। সেই ছবি ও ভিডিওতে মেহেন্দি দেখা গেছে। সিএফসি নেতাকর্মীরা জানান, মেহেদী নিপীড়নের বিরুদ্ধেও স্লোগান দেন।
মানববন্ধনে মেহেন্দির উপস্থিতির বিষয়ে সভাপতি রেজাউল হক সরাসরি কোনো জবাব দেননি। তবে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।