পদ্মার ঢেউয়ে সেজে উঠবে সব সরকারি অফিস
- আপডেট সময় ১০:৪০:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জুন ২০২২
- / ১২৩১ বার পড়া হয়েছে
পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে উৎসবে সাজবে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ সচিবালয়। একই সঙ্গে ৬টি বিভাগীয় শহর ও ৬৪টি জেলার সব সরকারি অফিস চত্বরে আলোকসজ্জার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে বিভাগীয় শহর ও সেতু কেন্দ্রিক চারটি জেলা- ঢাকা, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও মুন্সীগঞ্জ স্থানীয় প্রশাসনের আয়োজনে। গত ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর।
পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরায় অর্থাৎ সেতুর দুই প্রান্তে। অন্যদিকে মাদারীপুরের শিবচরে জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। সড়ক ও জনপথ সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী মঙ্গলবার যুগান্তরকে বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনে ব্যাপক কাজ চলছে। আমাদের বিভাগকে প্রয়োজনীয় সব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সবকিছু ভালভাবেই চলছে.
আলোর পাশাপাশি দেশের সব সরকারি অফিসকে পদ্মা সেতুকে তথ্য সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন ও স্টিকার দিয়ে সাজানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ উপলক্ষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সব জেলার ডিসিদের সঙ্গে এক দফা বৈঠক করেন। সেতুটি উদ্বোধনের আগে আরেকটি বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে জেলার সকল সরকারি দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণেরও নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সচিবালয়ের সাজসজ্জার দায়িত্বে থাকবে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী সব ভবনে পদ্মা সেতু সংক্রান্ত স্লোগান সম্বলিত বিশাল ড্রপডাউন ব্যানার টাঙানো হবে।
এতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসহ সেতুর ছবি থাকবে। এছাড়া সচিবালয়ের সব লিফটের সামনে পদ্মা সেতু সংক্রান্ত তথ্য ও স্লোগানের স্টিকার লাগানো হবে। ব্যানার-ফেস্টুনে থাকবে ‘পদ্মা সেতু নির্মাণ, শেখ হাসিনার অবদান’, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধন, শেখ হাসিনার স্বপ্ন পূরণ’ প্রভৃতি স্লোগান।
জেলায় প্রস্তুতি: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী উৎসবমুখর পরিবেশে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের জন্য সব জেলায় প্রস্তুতি চলছে। এরই মধ্যে যশোর জেলা প্রশাসন একাধিক বৈঠক করে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে। যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি যুগান্তরকে বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উদ্বোধনের দিন সকালে বেলুন ও পায়রা ওড়ানো হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি একটি বড় ডিসপ্লেতে দেখানো হবে। এছাড়া ঢাকা থেকে পাঠানো থিম সংক্রান্ত বিষয়গুলো প্রদর্শনীতে দেখতে পাবেন অংশগ্রহণকারীরা।
বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্যোগ রয়েছে বলে জানান তিনি। ঢাকা থেকে আমন্ত্রিত শিল্পীরা সেখানে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন। শহরজুড়ে উৎসবের ছাপ রাখতে আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি।
লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোসেন আকন্দ যুগান্তরকে বলেন, স্থানীয় স্টেডিয়ামে এলইডি মনিটরের মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখানো হবে। আশা করছি পাঁচ থেকে সাত হাজার লোকের সমাগম হবে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য মুক্তিযোদ্ধা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। আমি আশা করি এটি একটি ভাল অনুষ্ঠান হবে।
তবে বিভাগীয় শহর কেন্দ্রিক চারটি জেলা ও সেতু-ঢাকা, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও মুন্সীগঞ্জে স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে আরও জাকজমকপূর্ণ আয়োজন থাকবে। এসব স্থানে ৫ দিন কর্মসূচি পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী, উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বড় পর্দায় দেখানোর পাশাপাশি ঢাকা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে হাতিরঝিলে লেজার শো আয়োজন করা হচ্ছে। রাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে।
সেতু ঘিরে প্রস্তুতি: পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে ২৪ জুন সকাল থেকে ২৬ জুন সকাল পর্যন্ত সেতু সংলগ্ন মহাসড়কে কাভার্ড ভ্যান ও ট্রাক চলাচল করতে দেওয়া হবে না। উদ্বোধনের দিন ধলেশ্বরী, চায়না-মৈত্রী ও আড়িয়ালখান সেতুতে যান চলাচল নির্বিঘ্ন করতে টোল আদায় বন্ধ থাকবে। যানজট এড়াতে পোস্তগোলা সেতুতে ডিভাইডার বসানো হবে।
এছাড়া সেতু সংলগ্ন সড়কে প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠান পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় যানবাহন সরবরাহ করতে বিআরটিসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশপাশের জেলা থেকে পদ্মা সেতুতে যাওয়ার সব সড়কে বিলবোর্ড ও ডিজিটাল ব্যানার থাকবে।
সূত্র জানায়, উদ্বোধনের দিন পদ্মা সেতুর জাজিরা অংশে প্রচুর যানজট থাকবে। ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে