০৫:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

বন্যায় পাঁচ লাখের বেশি মানুষ আটকা পড়েছে

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:১৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন ২০২২
  • / ৯১৯ বার পড়া হয়েছে

bdopennews

সুনামগঞ্জের উপরিভাগ থেকে পাহাড়ি ঢল নেমে আসায় ছাদে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সুরমা ও বট নদীর পানি শিল্পনগরীর বিভিন্ন এলাকায় প্রবেশ করেছে। ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। দুর্ভোগ বেড়েছে জলাবদ্ধ এলাকার বানভাসি মানুষের।

পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে। ইতোমধ্যে উপজেলার তিন লাখের বেশি মানুষ প্লাবিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সুরমা-মেঘনা স্টেশনের ২৮ নম্বর ছাতক পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ২ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে।

এক মাসের ব্যবধানে ফের প্লাবিত হয়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। হাজার হাজার বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির, মাছের খামার, গ্রামীণ রাস্তাঘাট ও বাজার বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলার সর্বত্র এখন বন্যার পানি বইছে। সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। উপজেলার সব গ্রামীণ সড়ক তলিয়ে গেছে।

টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। পাঁচ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার পানিতে টিউবওয়েল তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

ছটকে শিল্পনগরীর ৪ দফা বন্যায় উপ-জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। প্রায় এক মাসের ব্যবধানে আরও দুটি বন্যায় উপজেলার ১৩৬টি ইউপির বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

আমি বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়ে গেলাম। ঘরের আসবাবপত্র ভেসে গেছে। বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা না থাকায় দুর্গন্ধযুক্ত পানি পান করতে হচ্ছে মানুষকে।

অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অঘোষিতভাবে বন্ধ রয়েছে। জলাবদ্ধ মানুষের জন্য ছয়টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে বলে জানা গেছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে পাঁচ শতাধিক বন্যা কবলিত পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

টানা বর্ষণ ও বর্ষণে উপজেলার সীমান্তবর্তী ইসলামপুর ও নোয়ারাই ইউনিয়নসহ পৌর এলাকার অধিকাংশ মানুষ বর্তমানে জলাবদ্ধতার মধ্যে রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ২ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার, চেলা নদীর পানি বিপদসীমার ২ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার এবং পিয়াইন নদীর পানি বিপদসীমার ২ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে। এছাড়া ডাইকি, বাতেরখাল ও বোকা নদীর পানিও বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমাসহ এসব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে উপজেলার ছোট-বড় শতাধিক সবজি বাগান। বন্যার পানিতে শহরের ট্রাফিক পয়েন্ট বাদে সারা শহরের রাস্তা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে।

বেরাজপুর গ্রামের আবুল কালাম ও নুরুল আমিন জানান, দুই দিন ধরে এখন সাড়ে তিন শতাধিক পরিবার ঘরে বসে খাবার নেই। তাদের খবর কেউ নেয়নি।

শিবনগর গ্রামের বাউল মঈনীর উদ্দিন নুরী জানান, নদীতে তাদের বসতবাড়ি ভেসে গেছে। তাদের কাছে টাকা নেই। বাড়িতে খাবার নেই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রহমান জানান, বন্যার্তদের জন্য বাউলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তাতিকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মন্ডলীভোগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছাতক সরকারি বহুমুখী মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও এসপিপিএম উচ্চ বিদ্যালয়সহ ১০৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই এসব আশ্রয়কেন্দ্রে দেড় শতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। বন্যার্তদের জন্য ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে

নিউজটি শেয়ার করুন

বন্যায় পাঁচ লাখের বেশি মানুষ আটকা পড়েছে

আপডেট সময় ০৮:১৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন ২০২২

সুনামগঞ্জের উপরিভাগ থেকে পাহাড়ি ঢল নেমে আসায় ছাদে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সুরমা ও বট নদীর পানি শিল্পনগরীর বিভিন্ন এলাকায় প্রবেশ করেছে। ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। দুর্ভোগ বেড়েছে জলাবদ্ধ এলাকার বানভাসি মানুষের।

পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে। ইতোমধ্যে উপজেলার তিন লাখের বেশি মানুষ প্লাবিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সুরমা-মেঘনা স্টেশনের ২৮ নম্বর ছাতক পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ২ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে।

এক মাসের ব্যবধানে ফের প্লাবিত হয়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। হাজার হাজার বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির, মাছের খামার, গ্রামীণ রাস্তাঘাট ও বাজার বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলার সর্বত্র এখন বন্যার পানি বইছে। সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। উপজেলার সব গ্রামীণ সড়ক তলিয়ে গেছে।

টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। পাঁচ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার পানিতে টিউবওয়েল তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

ছটকে শিল্পনগরীর ৪ দফা বন্যায় উপ-জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। প্রায় এক মাসের ব্যবধানে আরও দুটি বন্যায় উপজেলার ১৩৬টি ইউপির বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

আমি বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়ে গেলাম। ঘরের আসবাবপত্র ভেসে গেছে। বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা না থাকায় দুর্গন্ধযুক্ত পানি পান করতে হচ্ছে মানুষকে।

অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অঘোষিতভাবে বন্ধ রয়েছে। জলাবদ্ধ মানুষের জন্য ছয়টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে বলে জানা গেছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে পাঁচ শতাধিক বন্যা কবলিত পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

টানা বর্ষণ ও বর্ষণে উপজেলার সীমান্তবর্তী ইসলামপুর ও নোয়ারাই ইউনিয়নসহ পৌর এলাকার অধিকাংশ মানুষ বর্তমানে জলাবদ্ধতার মধ্যে রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ২ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার, চেলা নদীর পানি বিপদসীমার ২ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার এবং পিয়াইন নদীর পানি বিপদসীমার ২ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে। এছাড়া ডাইকি, বাতেরখাল ও বোকা নদীর পানিও বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমাসহ এসব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে উপজেলার ছোট-বড় শতাধিক সবজি বাগান। বন্যার পানিতে শহরের ট্রাফিক পয়েন্ট বাদে সারা শহরের রাস্তা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে।

বেরাজপুর গ্রামের আবুল কালাম ও নুরুল আমিন জানান, দুই দিন ধরে এখন সাড়ে তিন শতাধিক পরিবার ঘরে বসে খাবার নেই। তাদের খবর কেউ নেয়নি।

শিবনগর গ্রামের বাউল মঈনীর উদ্দিন নুরী জানান, নদীতে তাদের বসতবাড়ি ভেসে গেছে। তাদের কাছে টাকা নেই। বাড়িতে খাবার নেই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রহমান জানান, বন্যার্তদের জন্য বাউলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তাতিকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মন্ডলীভোগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছাতক সরকারি বহুমুখী মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও এসপিপিএম উচ্চ বিদ্যালয়সহ ১০৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই এসব আশ্রয়কেন্দ্রে দেড় শতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। বন্যার্তদের জন্য ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে