বিএনপির সমাবেশে হামলা, আ.লীগ বলছে ‘সংঘাত’, পুলিশ বলছে ‘শান্তিপূর্ণ’
- আপডেট সময় ০২:৫২:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ অগাস্ট ২০২২
- / ৭৬১ বার পড়া হয়েছে
বরিশালের উজিরপুরে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি ও দুই নেতাকে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশস্থলে যাওয়ার পথে ও আশপাশে হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিএনপি নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্রের হামলায় তাদের ৪০ নেতা আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে বিক্ষিপ্তভাবে এসব হামলার ঘটনা ঘটে। তবে আওয়ামী লীগ নেতারা হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, বিএনপির দলীয় কোন্দলের কারণে এ হামলা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, বিএনপির সমাবেশ ‘শান্তিপূর্ণ’ভাবে শেষ হয়েছে।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন বালুর মাঠে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে উজিরপুর উপজেলা বিএনপি। এতে সভাপতিত্ব করেন বরিশাল দক্ষিণের সাংগঠনিক দলের প্রধান ও জেলা বিএনপির সদস্য মো. নাসির জমাদ্দার। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক কাজী রওনকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বরিশাল জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. মজিবুর রহমান ও সদস্য সচিব আকতার হোসেন।
বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, সকাল ১১টার দিকে সভাস্থলে যাওয়ার পথে সাতলা, ডাবেরকুল, সদর টেম্পোস্ট্যান্ড, পৌর ডাকবাংলো ও বেলতলা এলাকায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়। সকাল সাড়ে এগারোটায় সভা শুরুর কিছুক্ষণ পরই সভা ঘিরে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও মারধর করা হয়। যদিও শেষ পর্যন্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. শহিদুল ইসলাম জানান, উজিরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রিপন মোল্লা, তার ভাই উজিরপুর পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শিন মোল্লা, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অসীম উকিল, উপজেলা স্বচ্ছসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সচিব মো. রিয়নের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের প্রায় ৫০-৬০ নেতাকর্মী লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে বিভিন্ন স্থানে হামলা চালায়। হামলাকারীরা অন্তত ৪০ জন নেতাকর্মীকে পিটিয়ে আহত করেছে। প্রায় ২০ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে সেখানে দ্বিতীয় দফা হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। আহতদের মধ্যে দুজনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বিএনপি নেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, সমাবেশে যাওয়ার পথে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপরও পুলিশ হামলা করেছে। আহতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন উজিরপুর উপজেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক মো. কাইয়ুম খান (৪০), উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম (৩২), সাতলা ইউনিয়ন ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আল আমিন (৫০), তার গাড়িচালক আবদুল্লাহ (৪০), সাতলা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন (২৮)। . ), সদস্য রুবেল হোসেন (৩০), পৌর শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুম্মন হোসেন (২৯), সহ-সম্পাদক কাওছার হোসেন (২৭) প্রমুখ।
হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রিপন মোল্লা, পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শিন মোল্লা ও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি অসীম উকিল। তাদের দাবি, হামলার সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কোনো নেতা-কর্মী জড়িত নয়। বিএনপির নিজস্ব দলীয় কোন্দলের মধ্যে হামলার ঘটনাও ঘটেছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন বেপারী আরো বলেন, বিএনপি মিথ্যাবাদী দল। তাই নিজেদের মধ্যে হামলা হলেও আওয়ামী লীগকে দায়ী করছেন তারা।
উজিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মমিন উদ্দিনও বিএনপি নেতাদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, হামলায় পুলিশের সম্পৃক্ততা তো দূরের কথা, কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেছে বিএনপি।