১২:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

সাগরে ইলিশ ধরা পড়লেও আকারে ছোট

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৩:৩৪:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ জুলাই ২০২২
  • / ১৫৯৭ বার পড়া হয়েছে

bdopennews

৬৫ দিনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার পর সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। তবে এসব ইলিশের বেশির ভাগই আকারে ছোট। সোমবার সকালে কক্সবাজারের প্রধান পাইকারি মাছের বাজার নুনিয়াচটা মৎস্য ঘাটের মাছ অবতরণ কেন্দ্রে জেলে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। শনিবার দুপুর ১২টায় মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষ হয় তবে নির্ধারিত সময়ের আগেই ইলিশ ধরতে কক্সবাজারের পাঁচ শতাধিক ট্রলার সাগরে গেছে। রোববার বিকেলে জেলার আরও সাড়ে ৫ হাজার ট্রলার মধ্যসাগরে যায়। এখন অনেক ট্রলার ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফিরছে। আকার ভেদে প্রতিটি ট্রলার ৫শ থেকে আট হাজার ইলিশ নিয়ে ফিরছে। ইলিশের সঙ্গে রয়েছে প্রবাল, লক্ষা, চাঁপা, মাইট্যা, পোপা, গুইজ্যাসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ। এতে খুশি ট্রলার মালিক ও জেলেরা।

কক্সবাজার ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন জানান, জেলার টেকনাফ, কক্সবাজার সদর, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া ও চকরিয়া উপজেলা থেকে অন্তত ছয় হাজার ট্রলার ইলিশ ধরতে সাগরে গেছে। বেশির ভাগ ট্রলারই ইলিশ ধরতে সাগরের ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার গভীরে যায়। বাকি ট্রলারগুলো 20 থেকে 30 কিমি দূরে তাদের জাল ফেলে। এখন আশপাশের ট্রলারগুলো ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফিরছে। দূরের ট্রলারগুলো মাছ ধরতে আরও দু-একদিন সময় লাগবে।

সকাল নয়টার দিকে এফবি হোসেন নামের একটি ট্রলার বাঁকখালী নদীর মৎস্য ঘাটে প্রবেশ করে। ট্রলার থেকে ইলিশ মাছ ল্যান্ডিং স্টেশনে ছোট ডিঙ্গি নৌকায় অবমুক্ত করা হয়। গুনে গুনে ৮ হাজার ১৩টি ইলিশ পাওয়া গেছে। বিক্রি থেকে 40 লাখ টাকা পাওয়া গেছে।

ট্রলারের মালিক ও নগরীর নুনিয়াচটা এলাকার বাসিন্দা হোসেন আহমেদ বলেন, আট হাজার ইলিশের ৭০ শতাংশের ওজন ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম।

এফবি নিশান-১ ট্রলারে ৫শ ইলিশ পাওয়া গেছে। মাছের ওজন 500 থেকে 600 গ্রাম। এফবি নিশান-২ ট্রলারে ৯০০ ইলিশ পাওয়া গেছে। মাছগুলো একই আকারের। ট্রলার দুটির মালিক মৎস্য ঘাট এলাকার বাসিন্দা ওসমান গণি। তিনি জানান, উত্তাল সমুদ্রের কারণে তার ট্রলার দুটি গভীর সাগরে যেতে পারেনি। আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে দুটি ট্রলার ইলিশ ধরতে সাগরে ফিরে যাবে।

মৎস্য ঘাটে ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম ওজনের ১০০ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫ হাজার টাকা, ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ১০০ ইলিশ ৩৫ হাজার টাকা, ১০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ১০০ ইলিশ, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১ হাজার ২০০ টাকা, ১ হাজার টাকা থেকে ৪০০ গ্রাম। আর ২০০ গ্রাম ওজনের ১০০ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকায়। নগরীর খুচরা বাজারে প্রতিটি ইলিশ ৫০ থেকে ২০০ টাকা লাভে বিক্রি হচ্ছে।

দুপুরে ঢাকার উদ্দেশে দুটি ট্রাক মৎস্য ঘাট ছেড়ে যায়। প্রতিটি ট্রাকে আট মেট্রিক টন ইলিশ বোঝাই করা হয়। স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী ইলিশের মালিক মিজানুর রহমান জানান, ট্রাক বোঝাই ইলিশ ঢাকার আবদুল্লাহপুর ও যাত্রাবাড়ীতে যাচ্ছে। প্রতি কেজি ইলিশে ১০ থেকে ২০ টাকা লাভ হবে।

ইলিশ ব্যবসায়ী সমিতির উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন জানান, কয়েকদিনের মধ্যে সাগর থেকে এক হাজারের বেশি ট্রলার ফিরে আসবে। এরপর বাজারে ইলিশ বিক্রি করা হবে। এ সময়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, বগুড়া, ফরিদপুরে বিপুল পরিমাণ ইলিশ সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বদরুজ্জামান জানান, গত বছর কক্সবাজার উপকূল থেকে ৩৯ হাজার ৩১৪ মেট্রিক টন ইলিশ আহরণ করা হয়েছে। এবার ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ হাজার মেট্রিক টন।

নিউজটি শেয়ার করুন

সাগরে ইলিশ ধরা পড়লেও আকারে ছোট

আপডেট সময় ০৩:৩৪:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ জুলাই ২০২২

৬৫ দিনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার পর সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। তবে এসব ইলিশের বেশির ভাগই আকারে ছোট। সোমবার সকালে কক্সবাজারের প্রধান পাইকারি মাছের বাজার নুনিয়াচটা মৎস্য ঘাটের মাছ অবতরণ কেন্দ্রে জেলে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। শনিবার দুপুর ১২টায় মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষ হয় তবে নির্ধারিত সময়ের আগেই ইলিশ ধরতে কক্সবাজারের পাঁচ শতাধিক ট্রলার সাগরে গেছে। রোববার বিকেলে জেলার আরও সাড়ে ৫ হাজার ট্রলার মধ্যসাগরে যায়। এখন অনেক ট্রলার ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফিরছে। আকার ভেদে প্রতিটি ট্রলার ৫শ থেকে আট হাজার ইলিশ নিয়ে ফিরছে। ইলিশের সঙ্গে রয়েছে প্রবাল, লক্ষা, চাঁপা, মাইট্যা, পোপা, গুইজ্যাসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ। এতে খুশি ট্রলার মালিক ও জেলেরা।

কক্সবাজার ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন জানান, জেলার টেকনাফ, কক্সবাজার সদর, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া ও চকরিয়া উপজেলা থেকে অন্তত ছয় হাজার ট্রলার ইলিশ ধরতে সাগরে গেছে। বেশির ভাগ ট্রলারই ইলিশ ধরতে সাগরের ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার গভীরে যায়। বাকি ট্রলারগুলো 20 থেকে 30 কিমি দূরে তাদের জাল ফেলে। এখন আশপাশের ট্রলারগুলো ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফিরছে। দূরের ট্রলারগুলো মাছ ধরতে আরও দু-একদিন সময় লাগবে।

সকাল নয়টার দিকে এফবি হোসেন নামের একটি ট্রলার বাঁকখালী নদীর মৎস্য ঘাটে প্রবেশ করে। ট্রলার থেকে ইলিশ মাছ ল্যান্ডিং স্টেশনে ছোট ডিঙ্গি নৌকায় অবমুক্ত করা হয়। গুনে গুনে ৮ হাজার ১৩টি ইলিশ পাওয়া গেছে। বিক্রি থেকে 40 লাখ টাকা পাওয়া গেছে।

ট্রলারের মালিক ও নগরীর নুনিয়াচটা এলাকার বাসিন্দা হোসেন আহমেদ বলেন, আট হাজার ইলিশের ৭০ শতাংশের ওজন ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম।

এফবি নিশান-১ ট্রলারে ৫শ ইলিশ পাওয়া গেছে। মাছের ওজন 500 থেকে 600 গ্রাম। এফবি নিশান-২ ট্রলারে ৯০০ ইলিশ পাওয়া গেছে। মাছগুলো একই আকারের। ট্রলার দুটির মালিক মৎস্য ঘাট এলাকার বাসিন্দা ওসমান গণি। তিনি জানান, উত্তাল সমুদ্রের কারণে তার ট্রলার দুটি গভীর সাগরে যেতে পারেনি। আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে দুটি ট্রলার ইলিশ ধরতে সাগরে ফিরে যাবে।

মৎস্য ঘাটে ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম ওজনের ১০০ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫ হাজার টাকা, ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ১০০ ইলিশ ৩৫ হাজার টাকা, ১০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ১০০ ইলিশ, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১ হাজার ২০০ টাকা, ১ হাজার টাকা থেকে ৪০০ গ্রাম। আর ২০০ গ্রাম ওজনের ১০০ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকায়। নগরীর খুচরা বাজারে প্রতিটি ইলিশ ৫০ থেকে ২০০ টাকা লাভে বিক্রি হচ্ছে।

দুপুরে ঢাকার উদ্দেশে দুটি ট্রাক মৎস্য ঘাট ছেড়ে যায়। প্রতিটি ট্রাকে আট মেট্রিক টন ইলিশ বোঝাই করা হয়। স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী ইলিশের মালিক মিজানুর রহমান জানান, ট্রাক বোঝাই ইলিশ ঢাকার আবদুল্লাহপুর ও যাত্রাবাড়ীতে যাচ্ছে। প্রতি কেজি ইলিশে ১০ থেকে ২০ টাকা লাভ হবে।

ইলিশ ব্যবসায়ী সমিতির উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন জানান, কয়েকদিনের মধ্যে সাগর থেকে এক হাজারের বেশি ট্রলার ফিরে আসবে। এরপর বাজারে ইলিশ বিক্রি করা হবে। এ সময়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, বগুড়া, ফরিদপুরে বিপুল পরিমাণ ইলিশ সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বদরুজ্জামান জানান, গত বছর কক্সবাজার উপকূল থেকে ৩৯ হাজার ৩১৪ মেট্রিক টন ইলিশ আহরণ করা হয়েছে। এবার ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ হাজার মেট্রিক টন।