সিলেটের ৮০ শতাংশ এলাকা পানির নিচে
- আপডেট সময় ০২:৩০:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জুন ২০২২
- / ১৬২১ বার পড়া হয়েছে
সিলেট বিভাগে বন্যা দেশের আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। উজানের ঢালে এই সেকশনের ৮০ শতাংশ এলাকা এখন পানির নিচে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জের ৯০ শতাংশ এলাকা তলিয়ে গেছে। বাকি তিন জেলা শহরের কয়েকটি উঁচু জায়গা, পাহাড়ি এলাকা ও ভবন ছাড়া সবখানেই এখন পানি। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামী দুই দিনে পানির স্তর আরও বাড়তে পারে। কিন্তু এরপর অধিকাংশ বন্যাই মূলত হাওর ও সুনামগঞ্জের নিম্নভূমিতে সীমাবদ্ধ ছিল। 2019 সালে সুনামগঞ্জ ও সিলেট শহর হঠাৎ করে দুই-তিন দিন বন্যায় প্লাবিত হয়। তবে সমগ্র সিলেট বিভাগের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়নি বলে জানিয়েছেন বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া। সিলেটের আগের বন্যাগুলো মূলত হাওর এলাকা ও এর আশপাশের এলাকায় সীমাবদ্ধ ছিল। তবে এবার গ্রাম, শহর ও উচ্চভূমিও পানির নিচে চলে গেছে। আর এই পানি সোমবারের আগে নামার সম্ভাবনা কম। ইউরোপীয় ইউনিয়নের জিওস্টেশনারি এজেন্সি ইসিএমডব্লিউ-এর মতে, আগামীকাল বাংলাদেশের উপরিভাগের চেরাপুঞ্জিতে ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হবে। এর আগে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৬২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল; যা 122 বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। আর গত তিন দিনে প্রায় আড়াই হাজার মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এই কয়েক দিনে এত বৃষ্টির রেকর্ড গত একশ বছরে নেই।
সুনামগঞ্জের ৯০ শতাংশ এলাকা তলিয়ে গেছে
* আগামী দুই দিনে পানি আরও বাড়বে
* সোমবারের আগে এই পানি নামার সম্ভাবনা কম
* 24 ঘন্টায় চেরাপুঞ্জিতে 972 মিমি বৃষ্টি
বাংলাদেশের নদী ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিলেট বিভাগের সুরমা, কুশিয়ারা, গোয়াইনসহ অধিকাংশ নদীতে পলি জমে অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নদীর বুক যেমন বাড়তে থাকে, তেমনি বৃষ্টির পানির ঢাল ধরে রাখতে পারে না। ফলে পানি উপচে পড়ছে এবং জনবসতি ও শহরাঞ্চলে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। হাওর এলাকায় কৃষিসহ বিভিন্ন কাজে পানি ধারণ ক্ষমতা কমে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, আজ সকাল ৮টায় সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের সামনে সুরমা নদীতে ১২ হাজার ঘনমিটার পানি প্রবাহিত হয়েছে। জলস্তর বিপদসীমার প্রায় এক মিটার উপরে ছিল। স্বাধীনতার পর এত উচ্চ মাত্রায় এবং এত বিপুল পরিমাণে দেশের ওই অংশে পানি আসেনি।
কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মোস্তফা কামাল প্রথম আলো</em>কে বলেন, “চেরাপুঞ্জিসহ আশপাশের এলাকাগুলো এমনিতেই বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। এবার বঙ্গোপসাগর উত্তপ্ত হওয়ায় মেঘ ও মৌসুমি বায়ু বেশ প্রবল ছিল।” সেজন্যই বেশি বৃষ্টি হচ্ছে।ফলে আমাদের এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নদীগুলো দ্রুত খনন করে পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়াতে হবে।তা না হলে প্রায় এক বছর এমন বন্যার সম্মুখীন হতে হবে।