সরকার বিব্রত, কিছু করবে না: প্রতিশ্রুতি দিয়ে নেতাদের জামিন চেয়েছে হেফাজত
- আপডেট সময় ০৭:২৩:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জুন ২০২২
- / ১১৮৩ বার পড়া হয়েছে
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ কারাবন্দি নেতাদের মুক্তি দাবি করেছে, জামিন পেলে সরকারকে বিব্রত করবে এমন কর্মকাণ্ডে না জড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এক চিঠিতে এ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়েছে, “আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে তারা জামিন-পরবর্তী কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত হবে না যা রাষ্ট্র ও সরকারের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করবে।”
হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে দেখা করেন। সভায় নায়েবে আমীর মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াহিয়া ও ফোরকান উল্লাহ খলিল, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইদ্রিস, ঢাকা মহানগর সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম সোবহানী ও সাধারণ সম্পাদক কেফায়েত উল্লাহ আজহারী উপস্থিত ছিলেন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে সাজিদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, কারাবন্দি আলেমদের মুক্তিসহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে পাঁচটি দাবি জানিয়েছেন তারা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, আলেম-ওলামারা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কারাবন্দী থাকায় তাদের পরিবার এবং তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন মসজিদ-মাদ্রাসার অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। কারাবন্দী আলেমদের অনেকেই গুরুতর অসুস্থতায় ভুগছেন। কয়েকজনকে হুইলচেয়ারে করে আদালতে হাজির করা হচ্ছে।
এছাড়া ২০১৩ ও ২০১৬ সালে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা প্রত্যাহার করা হয়নি। বিপরীতে, গত বছর গ্রেপ্তার হওয়া প্রায় সব আলেমকে ২০১৩ ও ২০১৬ সালের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া ২০২১ সালে কিছু মামলার চার্জশিট তৈরি করা হয়েছে। বৈঠকে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সব মামলা প্রত্যাহারের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন হেফাজত নেতারা।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের বিরোধিতাকে কেন্দ্র করে গত বছরের মার্চের শেষ দিকে সারাদেশে পুলিশের সঙ্গে হেফাজত নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। পরে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন স্থানে হেফাজত নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের অনেকেই এখনো কারাবন্দী।
এর মধ্যে অনেক নেতাকর্মীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। হেফাজত নেতারা সাহায্যের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। চিঠির শুরুতে এ কথা উল্লেখ করে বলা হয়, ‘মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়, আপনার কৃপা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রচেষ্টায় ইতোমধ্যে আলেম-উলামা ও হেফাজতে ইসলামের অনেক নেতাকর্মী জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। ” এজন্য আমরা আপনাকে এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানাই। ‘
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাজিদুর রহমান >কে বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের বলেছেন, আমার জামিন থাকলে ব্যবস্থা নিতাম। তবে অন্যান্য সরকারী সংস্থাও বন্দীদের জামিন দেওয়ার সাথে জড়িত। তাদের সঙ্গে কথা বলে কারাবন্দি নেতা-কর্মীদের মুক্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়া দেশের ১১৬ আলেম ও এক হাজার মাদ্রাসার নামে গণকমিশনের তথাকথিত শ্বেতপত্র বাজেয়াপ্ত করা, শিক্ষা আইন-২০২২-এর কমিটিতে কওমি মাদ্রাসার প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা, দুই নেতার অবমাননাকর বক্তব্যের প্রতিবাদে। ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি। দাবি জানিয়েছেন হেফাজত নেতারা।
গণকমিশনের কথিত শ্বেতপত্রের বিষয়ে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী তাকে দুর্নীতি দমন কমিশনকে অবহিত করার নির্দেশ দিয়েছেন যাতে শ্বেতপত্রের কার্যক্রম কার্যকর হয়। স্থগিত করা এসব কার্যক্রম স্থগিত করা হবে বলে আশ্বাস দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সাদা কাগজ বাজেয়াপ্ত করা হবে।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে তার একান্ত সচিব মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, এ বিষয়ে মন্ত্রী কোনো মন্তব্য করবেন না।
পরে সন্ধ্যায় মুঠোফোনে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান BD OPEN NEWS
কে বলেন, “হেফাজতে ইসলামের নেতারা বেশ কিছু দাবি নিয়ে এসেছেন। আমি বলেছি, আমরা তাদের দাবিগুলো দেখব। আমি বলেছি। এর আগে তাদের দাবি পর্যালোচনা করা হবে।’