১১:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

পদ্মা সেতুর ব্যয় যে কোনো অবস্থাতেই সাধ্যের মধ্যে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৬:১৩:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন ২০২২
  • / ১৩২০ বার পড়া হয়েছে

bdopennews

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় যে কোনো অবস্থাতেই সহনীয়। সমসাময়িক সময়ে নির্মিত সব সেতুর তুলনায় এই সেতুর খরচ খুবই যুক্তিসঙ্গত। এখানে যৌক্তিকতার বাইরে কোনো কাজ বা ব্যয় অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ ছিল না।

বৃহস্পতিবার একাদশ জাতীয় সংসদের ১৮তম অধিবেশনের (বাজেট অধিবেশন) সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রায় পুরোটাই ছিল পদ্মা সেতু নিয়ে। তিনি বলেন, সেতু নির্মাণের ব্যয় নিয়ে আরও বিতর্ক সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে। নদী ব্যবস্থাপনা, পুনর্বাসন, ইউটিলিটি সুবিধাসহ অন্যান্য ব্যয় বাদে শুধু মূল সেতুর ব্যয় ১১ হাজার ১৩৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। যে কোনো ক্ষেত্রে এই খরচ সাশ্রয়ী মূল্যের. এই খরচ যে কোন বিচারে একটি অত্যন্ত বিশ্বাসযোগ্য অর্জন বলে বিবেচিত হবে। এখানে দুর্নীতির কোনো সুযোগ ছিল না।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় বৃদ্ধির বিভিন্ন কারণ তুলে ধরে বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যখন সেতুর পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তখন তাতে তেমন কিছু ছিল না। সড়কে রেলপথ সংযোজন, নদী শাসন বৃদ্ধি, অধিগ্রহণকৃত জমির পরিমাণ ও মূল্য বৃদ্ধি, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন, পাইলিংয়ের গভীরতা বৃদ্ধিসহ ব্যয় বৃদ্ধির কারণগুলো তিনি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন।

পদ্মা সেতুকে একটি বড় অর্জন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই সেতুটি সমগ্র জাতির ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। সবাই বলছে, “আমরা পারি।” মানুষের ভেতর থেকে একটি শক্তি বেরিয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চোখে দেশের অবস্থান। সমালোচকরা তাদের দেশের শক্তি, জনগণের সাহস সম্পর্কে অজ্ঞ।’

শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য দাতারা মিথ্যা অজুহাত ও দুর্নীতির অজুহাতে পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন থেকে সরে এসেছে। এরপর তিনি বলেন, তাদের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। অনেক বিশেষজ্ঞ এমনকি রাজনৈতিক নেতারাও মনে করেছিলেন বিশ্বব্যাংক ছাড়া সেতু নির্মাণ সম্ভব নয়। অনেকে জুজুর ভয় দেখিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সেতুর মাধ্যমে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।

নির্ধারিত সময়ের আগেই পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় উঠে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, সম্ভাব্যতা সমীক্ষা অনুযায়ী টোল আদায়ের মাধ্যমে ২৫ থেকে ২৬ বছরের মধ্যে ব্যয় বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে তার আগেই খরচ উঠে আসবে। কারণ, এই সেতুর যোগাযোগ আরও বিস্তৃত হবে। এটি 18 থেকে 20 বছরে খরচ বাড়াবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেতু কর্তৃপক্ষ নিজস্ব অর্থায়নে সরকারের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছে। সেতু কর্তৃপক্ষ ২৫ বছরে সরকারকে ১ শতাংশ সুদ পরিশোধ করবে এমন চুক্তিতে ঋণ নিয়েছে। বাংলাদেশি টাকায় এই সেতুটি নির্মিত হয়েছে।

সংসদের বাজেট অধিবেশন খুবই প্রাণবন্ত ছিল মন্তব্য করে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, বিরোধী দল বিশেষ করে বিএনপির সংসদ সদস্যরা কথা বলার যথেষ্ট সুযোগ পেয়েছেন। আপনি আপনার ইচ্ছা মত কথা বলতে পেরেছেন. যারা ‘সরকারি বিরোধী দল’ তারাও সুযোগ পেয়েছেন। বাজেট অধিবেশনে 228 সংসদ সদস্য বাজেট নিয়ে আলোচনা করেন। মোট 36 ঘন্টা 56 মিনিট আলোচনা হয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা সংক্রমণ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পণ্যের দাম বেড়েছে, বিশেষ করে যেগুলো আমদানি করতে হয়। দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখতে নিয়মিত বাজার মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে।

বন্যাকবলিত মানুষের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বন্যা হবে।

৫ জুন থেকে শুরু হওয়া বাজেট অধিবেশন শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার। অধিবেশন শেষে সংসদে পদ্মা সেতু নিয়ে একটি তথ্যচিত্র দেখানো হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

পদ্মা সেতুর ব্যয় যে কোনো অবস্থাতেই সাধ্যের মধ্যে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় ০৬:১৩:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন ২০২২

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় যে কোনো অবস্থাতেই সহনীয়। সমসাময়িক সময়ে নির্মিত সব সেতুর তুলনায় এই সেতুর খরচ খুবই যুক্তিসঙ্গত। এখানে যৌক্তিকতার বাইরে কোনো কাজ বা ব্যয় অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ ছিল না।

বৃহস্পতিবার একাদশ জাতীয় সংসদের ১৮তম অধিবেশনের (বাজেট অধিবেশন) সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রায় পুরোটাই ছিল পদ্মা সেতু নিয়ে। তিনি বলেন, সেতু নির্মাণের ব্যয় নিয়ে আরও বিতর্ক সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে। নদী ব্যবস্থাপনা, পুনর্বাসন, ইউটিলিটি সুবিধাসহ অন্যান্য ব্যয় বাদে শুধু মূল সেতুর ব্যয় ১১ হাজার ১৩৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। যে কোনো ক্ষেত্রে এই খরচ সাশ্রয়ী মূল্যের. এই খরচ যে কোন বিচারে একটি অত্যন্ত বিশ্বাসযোগ্য অর্জন বলে বিবেচিত হবে। এখানে দুর্নীতির কোনো সুযোগ ছিল না।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় বৃদ্ধির বিভিন্ন কারণ তুলে ধরে বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যখন সেতুর পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তখন তাতে তেমন কিছু ছিল না। সড়কে রেলপথ সংযোজন, নদী শাসন বৃদ্ধি, অধিগ্রহণকৃত জমির পরিমাণ ও মূল্য বৃদ্ধি, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন, পাইলিংয়ের গভীরতা বৃদ্ধিসহ ব্যয় বৃদ্ধির কারণগুলো তিনি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন।

পদ্মা সেতুকে একটি বড় অর্জন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই সেতুটি সমগ্র জাতির ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। সবাই বলছে, “আমরা পারি।” মানুষের ভেতর থেকে একটি শক্তি বেরিয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চোখে দেশের অবস্থান। সমালোচকরা তাদের দেশের শক্তি, জনগণের সাহস সম্পর্কে অজ্ঞ।’

শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য দাতারা মিথ্যা অজুহাত ও দুর্নীতির অজুহাতে পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন থেকে সরে এসেছে। এরপর তিনি বলেন, তাদের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। অনেক বিশেষজ্ঞ এমনকি রাজনৈতিক নেতারাও মনে করেছিলেন বিশ্বব্যাংক ছাড়া সেতু নির্মাণ সম্ভব নয়। অনেকে জুজুর ভয় দেখিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সেতুর মাধ্যমে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।

নির্ধারিত সময়ের আগেই পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় উঠে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, সম্ভাব্যতা সমীক্ষা অনুযায়ী টোল আদায়ের মাধ্যমে ২৫ থেকে ২৬ বছরের মধ্যে ব্যয় বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে তার আগেই খরচ উঠে আসবে। কারণ, এই সেতুর যোগাযোগ আরও বিস্তৃত হবে। এটি 18 থেকে 20 বছরে খরচ বাড়াবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেতু কর্তৃপক্ষ নিজস্ব অর্থায়নে সরকারের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছে। সেতু কর্তৃপক্ষ ২৫ বছরে সরকারকে ১ শতাংশ সুদ পরিশোধ করবে এমন চুক্তিতে ঋণ নিয়েছে। বাংলাদেশি টাকায় এই সেতুটি নির্মিত হয়েছে।

সংসদের বাজেট অধিবেশন খুবই প্রাণবন্ত ছিল মন্তব্য করে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, বিরোধী দল বিশেষ করে বিএনপির সংসদ সদস্যরা কথা বলার যথেষ্ট সুযোগ পেয়েছেন। আপনি আপনার ইচ্ছা মত কথা বলতে পেরেছেন. যারা ‘সরকারি বিরোধী দল’ তারাও সুযোগ পেয়েছেন। বাজেট অধিবেশনে 228 সংসদ সদস্য বাজেট নিয়ে আলোচনা করেন। মোট 36 ঘন্টা 56 মিনিট আলোচনা হয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা সংক্রমণ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পণ্যের দাম বেড়েছে, বিশেষ করে যেগুলো আমদানি করতে হয়। দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখতে নিয়মিত বাজার মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে।

বন্যাকবলিত মানুষের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বন্যা হবে।

৫ জুন থেকে শুরু হওয়া বাজেট অধিবেশন শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার। অধিবেশন শেষে সংসদে পদ্মা সেতু নিয়ে একটি তথ্যচিত্র দেখানো হয়।