০৩:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

‘আয়না’ ভাঙতে হবে: জাফরুল্লাহ

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৪:১২:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ অগাস্ট ২০২২
  • / ৬৫৩ বার পড়া হয়েছে

bdopennews

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সরকার পরিবর্তন হলেই ‘কল্যাণকর বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, দেশে একের পর এক গুমের গল্প শেষ হচ্ছে না। এটা পরিবর্তন করা প্রয়োজন. সে জন্য বর্তমান সরকারকে বদলাতে হবে এবং আয়না ঘর ভেঙে দিতে হবে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘সাদা পোশাকে নিখোঁজ ও গ্রেফতারকৃত শিক্ষার্থীদের স্মরণ ও শিক্ষার্থীদের সমাবেশ’ শীর্ষক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরী এসব কথা বলেন। নিখোঁজ সকল নাগরিককে তাদের পরিবারের কাছে ফেরত, সকল ‘রাজবন্দীর’ মুক্তি এবং জাতিসংঘের অধীনে একটি নিরপেক্ষ কমিটির মাধ্যমে গুমের সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা এই সমাবেশের আয়োজন করে।

নিখোঁজ ব্যক্তিদের তুলে নিয়ে গোপন স্থানে ‘মিরর’ নামক একটি তথ্যচিত্র সম্প্রতি একটি অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত হয়েছে। জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, দেশে আজ কত আয়না ঘর আছে আমরা জানি না। দেশে গুমের গল্প শেষ হয়নি। এটা বদলাতে হবে।’

জাফরুল্লাহ চৌধুরীও এ প্রসঙ্গে বিএনপির সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি একবারও বলে না যে, তারা ক্ষমতায় এলে সব আয়না ভেঙ্গে দেবে এবং যারা গুম হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণ দেবে। তারা ভুল করছে। সব বিরোধী দলকে বলতে হবে। ঐক্যবদ্ধ কন্ঠে পুলিশের উদ্দেশে বলছি, এটা বন্ধ না হলে প্রত্যেক পুলিশ সদস্যের বিচার করা হবে।যারা গুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে এবং তারা যাতে বিদেশে যেতে পারে সেজন্য অগ্রাধিকারমূলক শিক্ষা দেওয়া হবে।এ জন্য সরকারের পরিবর্তন প্রয়োজন। , আয়না ঘর ভেঙ্গে ফেলা প্রয়োজন.

আরও পড়ুন

এ সরকারের পরিবর্তন হবে বলে মনে করেন পেশাজীবী নেতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী। এই ধারণার পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, কোনো ‘ফ্যাসিবাদী সরকার’ এভাবে টিকে থাকতে পারে না কিন্তু দুর্ভাগ্য যে বিএনপি তার নেতাকে চেনে না। তাদের নেতা হবেন খালেদা জিয়া, তারেক রহমান নয়। খালেদা জিয়া আজ জামিন পেলে তিন-চার মাসে বয়ে যাবে পরিবর্তনের জোয়ার। তার মাধ্যমে প্রত্যেক নিখোঁজ ব্যক্তির ক্ষতিপূরণের দাবি জানাতে হবে। এ সময় ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা তুলে ধরে জাফরুল্লাহ বলেন, আমিও শেখ সাহেবের (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) আমলে কয়েকদিন নিখোঁজ ছিলাম। খুব দীর্ঘ নয়, তবে সংক্ষিপ্ত। সাদা পোশাকের অফিসার আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। আধুনিক স্টাইলে নির্যাতন করা হয়। আমার দুই পাশে একটি 2000 ওয়াটের বাতি রেখে আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী সুষ্ঠু নির্বাচন ছাড়া দেশের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের কোনো পথ নেই বলে মন্তব্য করেছেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ভয় পাবেন না। আপনি জিততে পারেন বা হারতে পারেন। কিন্তু তোমার প্রতি অবিচার করা হবে না। আপনি খালেদা জিয়াকে জামিন দিন। ছাত্রদের কথা শুনুন, উপকৃত হবেন। রাগ ও হিংসা ত্যাগ করুন। কোনো প্রতিশোধ হবে না। তোমরা কোন পুরুষের গায়ে হাত তুলবে না। কেউ তোমাকে ভুল করবে না।

তবে আমাদের সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার, আমাদের সুশাসন দরকার এবং নির্বাচনের আগে আমাদের একটি নিরপেক্ষ সরকার বা জাতীয় সরকার দরকার। এবার 2014 ও 2018 সালের খেলা চলবে না, ইভিএম চালাকি চলবে না। একই কৌশল পুনরাবৃত্তি করা যাবে না.

সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মুহাম্মদ রশিদ খান 2018 সালে গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমাকে গ্রেপ্তার করে ভাষানটেক থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। অত্যাচারে হাঁটতেও পারতাম না।

ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, নিখোঁজদের ফেরত না পেলে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে লংমার্চ করবেন। সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বলেন, ছাত্র সমাজ দর্পণ ও ফ্যাসিবাদকে উৎখাত করবে।

গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বর্তমান সরকারের আজ্ঞাবহ দাসে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আখতার হোসেন।

গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের শিকার ছাত্র অধিকার পরিষদের নেত্রী মিনা আল আমিন বলেন, ‘আয়না বন্দি’ ছবির চিত্র নিখোঁজের প্রকৃত চিত্রের ৫ শতাংশেরও কম। বাস্তব চিত্র অনেক বেশি ভয়াবহ।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র অধিকার নেতা সালেহউদ্দিন সিফাত ও জাহিদ আহসান, গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক তারেক রহমান ও শাকিল উজ্জামান, ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি তারেকুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন, রাষ্ট্রচিন্তা সংগঠক মো. দিদারুল ভূঁইয়া, ছাত্র ফেডারেশনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অর্থ সম্পাদক মো. আরমানুল হক অন্যান্য বক্তব্য রাখেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

‘আয়না’ ভাঙতে হবে: জাফরুল্লাহ

আপডেট সময় ০৪:১২:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ অগাস্ট ২০২২

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সরকার পরিবর্তন হলেই ‘কল্যাণকর বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, দেশে একের পর এক গুমের গল্প শেষ হচ্ছে না। এটা পরিবর্তন করা প্রয়োজন. সে জন্য বর্তমান সরকারকে বদলাতে হবে এবং আয়না ঘর ভেঙে দিতে হবে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘সাদা পোশাকে নিখোঁজ ও গ্রেফতারকৃত শিক্ষার্থীদের স্মরণ ও শিক্ষার্থীদের সমাবেশ’ শীর্ষক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরী এসব কথা বলেন। নিখোঁজ সকল নাগরিককে তাদের পরিবারের কাছে ফেরত, সকল ‘রাজবন্দীর’ মুক্তি এবং জাতিসংঘের অধীনে একটি নিরপেক্ষ কমিটির মাধ্যমে গুমের সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা এই সমাবেশের আয়োজন করে।

নিখোঁজ ব্যক্তিদের তুলে নিয়ে গোপন স্থানে ‘মিরর’ নামক একটি তথ্যচিত্র সম্প্রতি একটি অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত হয়েছে। জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, দেশে আজ কত আয়না ঘর আছে আমরা জানি না। দেশে গুমের গল্প শেষ হয়নি। এটা বদলাতে হবে।’

জাফরুল্লাহ চৌধুরীও এ প্রসঙ্গে বিএনপির সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি একবারও বলে না যে, তারা ক্ষমতায় এলে সব আয়না ভেঙ্গে দেবে এবং যারা গুম হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণ দেবে। তারা ভুল করছে। সব বিরোধী দলকে বলতে হবে। ঐক্যবদ্ধ কন্ঠে পুলিশের উদ্দেশে বলছি, এটা বন্ধ না হলে প্রত্যেক পুলিশ সদস্যের বিচার করা হবে।যারা গুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে এবং তারা যাতে বিদেশে যেতে পারে সেজন্য অগ্রাধিকারমূলক শিক্ষা দেওয়া হবে।এ জন্য সরকারের পরিবর্তন প্রয়োজন। , আয়না ঘর ভেঙ্গে ফেলা প্রয়োজন.

আরও পড়ুন

এ সরকারের পরিবর্তন হবে বলে মনে করেন পেশাজীবী নেতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী। এই ধারণার পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, কোনো ‘ফ্যাসিবাদী সরকার’ এভাবে টিকে থাকতে পারে না কিন্তু দুর্ভাগ্য যে বিএনপি তার নেতাকে চেনে না। তাদের নেতা হবেন খালেদা জিয়া, তারেক রহমান নয়। খালেদা জিয়া আজ জামিন পেলে তিন-চার মাসে বয়ে যাবে পরিবর্তনের জোয়ার। তার মাধ্যমে প্রত্যেক নিখোঁজ ব্যক্তির ক্ষতিপূরণের দাবি জানাতে হবে। এ সময় ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা তুলে ধরে জাফরুল্লাহ বলেন, আমিও শেখ সাহেবের (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) আমলে কয়েকদিন নিখোঁজ ছিলাম। খুব দীর্ঘ নয়, তবে সংক্ষিপ্ত। সাদা পোশাকের অফিসার আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। আধুনিক স্টাইলে নির্যাতন করা হয়। আমার দুই পাশে একটি 2000 ওয়াটের বাতি রেখে আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী সুষ্ঠু নির্বাচন ছাড়া দেশের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের কোনো পথ নেই বলে মন্তব্য করেছেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ভয় পাবেন না। আপনি জিততে পারেন বা হারতে পারেন। কিন্তু তোমার প্রতি অবিচার করা হবে না। আপনি খালেদা জিয়াকে জামিন দিন। ছাত্রদের কথা শুনুন, উপকৃত হবেন। রাগ ও হিংসা ত্যাগ করুন। কোনো প্রতিশোধ হবে না। তোমরা কোন পুরুষের গায়ে হাত তুলবে না। কেউ তোমাকে ভুল করবে না।

তবে আমাদের সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার, আমাদের সুশাসন দরকার এবং নির্বাচনের আগে আমাদের একটি নিরপেক্ষ সরকার বা জাতীয় সরকার দরকার। এবার 2014 ও 2018 সালের খেলা চলবে না, ইভিএম চালাকি চলবে না। একই কৌশল পুনরাবৃত্তি করা যাবে না.

সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মুহাম্মদ রশিদ খান 2018 সালে গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমাকে গ্রেপ্তার করে ভাষানটেক থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। অত্যাচারে হাঁটতেও পারতাম না।

ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, নিখোঁজদের ফেরত না পেলে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে লংমার্চ করবেন। সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বলেন, ছাত্র সমাজ দর্পণ ও ফ্যাসিবাদকে উৎখাত করবে।

গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বর্তমান সরকারের আজ্ঞাবহ দাসে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আখতার হোসেন।

গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের শিকার ছাত্র অধিকার পরিষদের নেত্রী মিনা আল আমিন বলেন, ‘আয়না বন্দি’ ছবির চিত্র নিখোঁজের প্রকৃত চিত্রের ৫ শতাংশেরও কম। বাস্তব চিত্র অনেক বেশি ভয়াবহ।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র অধিকার নেতা সালেহউদ্দিন সিফাত ও জাহিদ আহসান, গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক তারেক রহমান ও শাকিল উজ্জামান, ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি তারেকুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন, রাষ্ট্রচিন্তা সংগঠক মো. দিদারুল ভূঁইয়া, ছাত্র ফেডারেশনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অর্থ সম্পাদক মো. আরমানুল হক অন্যান্য বক্তব্য রাখেন।