১০:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

আত্মহত্যার কারণ জানতে পারছে না পুলিশ কনস্টেবল মাহমুদুলের পরিবার

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৫:৪৫:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই ২০২২
  • / ১৫৬০ বার পড়া হয়েছে

bdopennews

পুলিশ সদস্য মাহমুদুল হাসান ওরফে আকাশ আত্মহত্যা করতে পারে, তার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছে না তার পরিবার। বাবা এজাজুল হক খান পুলিশ সদস্যসহ পরিবারের কেউ বিশ্বাস করতে পারছিলেন না মাহমুদুল এমন ঘটনা ঘটাতে পারে।

ছেলের পরিবারের সদস্যরা বিপর্যস্ত। দুই ভাই-বোনের মধ্যে মাহমুদুল হাসান ছোট। গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পিপুলবাড়িয়ায়। তবে তাদের পরিবারের সদস্যরা কুষ্টিয়া শহরের নতুন কমলাপুর এলাকায় নিজস্ব দোতলা বাড়িতে থাকেন। ঘটনার পর মাহমুদুলের বাবা-মা তার লাশ সংগ্রহ করতে মাগুরায় যান।

মাহমুদুলের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মাহমুদুল হাসান প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে পুলিশের চাকরিতে যোগ দেন। প্রশিক্ষণ শেষে যোগ দেন খুলনায়। যোগদানের পর তাকে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার খন্দকার লাবনীর দেহরক্ষীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। দেড় মাস আগে তার সর্বশেষ পোস্টিং হয় মাগুরায়।

মাহমুদুল কুষ্টিয়া পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাস করেন। কলেজে পড়ার সময় চাকরিতে যোগ দেন। কিন্তু এই পরিবারের কেউই গ্রামের বাড়িতে থাকেন না। তার অন্য মামারা গ্রামে থাকে। তার মৃত্যুর খবর শুনে অনেক আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা মাহমুদুলের বাড়ির সামনে ভিড় জমায়। প্রতিবেশীরা জানান, গত ঈদে মাহমুদুলের পরিবার গ্রামে গিয়েছিল। কয়েকদিন পর চলে যায়। পরিবারের সদস্যরা এলাকায় যান না। তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই।

মাহমুদুলের বাবা এজাজুল হক খান এখন চুয়াডাঙ্গায় কর্মরত। তিনিও একজন পুলিশ কনস্টেবল। কুষ্টিয়া শহরের নতুন কমলাপুর এলাকায় বহু বছর আগে বাড়ি তৈরি করেন। প্রতিবেশী ও স্বজনরা জানান, সকালে ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে বাবা-মা দুইজন মাগুরায় যান।

মাহমুদুল এখনো বিয়ে করেননি। আত্মহত্যা করতে পারে, বিশ্বাস হয় না। কারণ, মাহমুদুল ভদ্র ও ভালো ছেলে। কেন সে আত্মহত্যা করেছে তা খতিয়ে দেখা উচিত। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে মাহমুদুলের বাবা এজাজুল হক খান বলেন, ‘মাহমুদুলের মধ্যে কখনো হতাশা দেখিনি। কেন সে আত্মহত্যা করেছে বুঝতে পারছি না। বাড়িতে নিয়মিত কথা বলতেন। এখন লাশ নিতে মাগুরা।

মাহমুদুলের বড় বোন সুরাইয়া খাতুন বলেন, “সড়ক দুর্ঘটনায় মাহমুদুলের মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা প্রথমে খবর পাই। পরে জানতে পারি সে আত্মহত্যা করেছে। কেন মাহমুদুল আত্মহত্যা করেছে তা আমরা জানি না।

মাহমুদুল হাসানের চাচা শওকত আলী খান জানান, গত ঈদে মাহমুদুল তার বাবা-মাকে নিয়ে বাড়িতে আসেন। ঈদের দিন তারা শহরের উদ্দেশে রওনা হন। মাহমুদুল এখনো বিয়ে করেননি। আত্মহত্যা করতে পারে, বিশ্বাস হয় না। কারণ, মাহমুদুল ভদ্র ও ভালো ছেলে। কেন সে আত্মহত্যা করেছে তা খতিয়ে দেখা উচিত। নিছক আত্মহত্যা নাকি অন্য কিছু তাও পরিষ্কার হওয়া দরকার। আর মাহমুদুলের মরদেহ মাগুরা থেকে দেশে আনা হবে, তাকে গ্রামের বাড়িতে দাফনের প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার একজন কর্মকর্তা জানান, মাহমুদুলের মৃত্যুর খবর পেয়ে তারা তদন্ত করছেন। তার পরিবার শোকে কাতর। তারা এখনো এ ধরনের কোনো তথ্য পায়নি। আত্মহত্যার বিষয়ে পরিবারের সদস্যরাও কিছু বলতে পারছেন না।

নিউজটি শেয়ার করুন

আত্মহত্যার কারণ জানতে পারছে না পুলিশ কনস্টেবল মাহমুদুলের পরিবার

আপডেট সময় ০৫:৪৫:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই ২০২২

পুলিশ সদস্য মাহমুদুল হাসান ওরফে আকাশ আত্মহত্যা করতে পারে, তার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছে না তার পরিবার। বাবা এজাজুল হক খান পুলিশ সদস্যসহ পরিবারের কেউ বিশ্বাস করতে পারছিলেন না মাহমুদুল এমন ঘটনা ঘটাতে পারে।

ছেলের পরিবারের সদস্যরা বিপর্যস্ত। দুই ভাই-বোনের মধ্যে মাহমুদুল হাসান ছোট। গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পিপুলবাড়িয়ায়। তবে তাদের পরিবারের সদস্যরা কুষ্টিয়া শহরের নতুন কমলাপুর এলাকায় নিজস্ব দোতলা বাড়িতে থাকেন। ঘটনার পর মাহমুদুলের বাবা-মা তার লাশ সংগ্রহ করতে মাগুরায় যান।

মাহমুদুলের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মাহমুদুল হাসান প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে পুলিশের চাকরিতে যোগ দেন। প্রশিক্ষণ শেষে যোগ দেন খুলনায়। যোগদানের পর তাকে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার খন্দকার লাবনীর দেহরক্ষীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। দেড় মাস আগে তার সর্বশেষ পোস্টিং হয় মাগুরায়।

মাহমুদুল কুষ্টিয়া পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাস করেন। কলেজে পড়ার সময় চাকরিতে যোগ দেন। কিন্তু এই পরিবারের কেউই গ্রামের বাড়িতে থাকেন না। তার অন্য মামারা গ্রামে থাকে। তার মৃত্যুর খবর শুনে অনেক আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা মাহমুদুলের বাড়ির সামনে ভিড় জমায়। প্রতিবেশীরা জানান, গত ঈদে মাহমুদুলের পরিবার গ্রামে গিয়েছিল। কয়েকদিন পর চলে যায়। পরিবারের সদস্যরা এলাকায় যান না। তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই।

মাহমুদুলের বাবা এজাজুল হক খান এখন চুয়াডাঙ্গায় কর্মরত। তিনিও একজন পুলিশ কনস্টেবল। কুষ্টিয়া শহরের নতুন কমলাপুর এলাকায় বহু বছর আগে বাড়ি তৈরি করেন। প্রতিবেশী ও স্বজনরা জানান, সকালে ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে বাবা-মা দুইজন মাগুরায় যান।

মাহমুদুল এখনো বিয়ে করেননি। আত্মহত্যা করতে পারে, বিশ্বাস হয় না। কারণ, মাহমুদুল ভদ্র ও ভালো ছেলে। কেন সে আত্মহত্যা করেছে তা খতিয়ে দেখা উচিত। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে মাহমুদুলের বাবা এজাজুল হক খান বলেন, ‘মাহমুদুলের মধ্যে কখনো হতাশা দেখিনি। কেন সে আত্মহত্যা করেছে বুঝতে পারছি না। বাড়িতে নিয়মিত কথা বলতেন। এখন লাশ নিতে মাগুরা।

মাহমুদুলের বড় বোন সুরাইয়া খাতুন বলেন, “সড়ক দুর্ঘটনায় মাহমুদুলের মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা প্রথমে খবর পাই। পরে জানতে পারি সে আত্মহত্যা করেছে। কেন মাহমুদুল আত্মহত্যা করেছে তা আমরা জানি না।

মাহমুদুল হাসানের চাচা শওকত আলী খান জানান, গত ঈদে মাহমুদুল তার বাবা-মাকে নিয়ে বাড়িতে আসেন। ঈদের দিন তারা শহরের উদ্দেশে রওনা হন। মাহমুদুল এখনো বিয়ে করেননি। আত্মহত্যা করতে পারে, বিশ্বাস হয় না। কারণ, মাহমুদুল ভদ্র ও ভালো ছেলে। কেন সে আত্মহত্যা করেছে তা খতিয়ে দেখা উচিত। নিছক আত্মহত্যা নাকি অন্য কিছু তাও পরিষ্কার হওয়া দরকার। আর মাহমুদুলের মরদেহ মাগুরা থেকে দেশে আনা হবে, তাকে গ্রামের বাড়িতে দাফনের প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার একজন কর্মকর্তা জানান, মাহমুদুলের মৃত্যুর খবর পেয়ে তারা তদন্ত করছেন। তার পরিবার শোকে কাতর। তারা এখনো এ ধরনের কোনো তথ্য পায়নি। আত্মহত্যার বিষয়ে পরিবারের সদস্যরাও কিছু বলতে পারছেন না।